করোনায় যে শুধুমাত্র অসুস্থ হয়ে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে তা কিন্তু নয়। এই মারণ ভাইরাস সাধারণ মানুষের মনেও গভীর প্রভাব ফেলেছে। অনেকেই প্রতিবেশীদের আচরণের কারণে নিজেকে অচ্ছুৎ মনে করছেন। আবার অনেক করোনা আক্রান্তের ধারণা হচ্ছে তার কারণে পরিবারের বাকিরা বিপদগ্রস্থ হয়ে পড়তে পারেন। সম্ভবত সেরকম কারণেই মানসিক অবসাদে ভুগে আত্মঘাতী হলেন এক অশীতিপর করোনা আক্রান্ত রুগী। এই ঘটনা কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকায়।
রিজেন্ট পার্কের বাবুপাড়ায় ৮১ বছরের করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধ গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন। তার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে তিনদিন আগে ওই ব্যক্তির করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছিল। তারপর থেকেই তিনি হোম আইসোলেশনে ছিলেন। পরিবারের অনুমান ওই বৃদ্ধ করোনা হওয়ার ফলে চরম মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সেই কারণেই সম্ভবত এই চরম পথ বেছে নেন। এই মর্মান্তিক ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই করোনা আক্রান্তদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। কারণ করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত কয়েকদিনে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা খুব একটা বিরল নয় কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে।
আরও পড়ুন
করোনায় বাতিল একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা, হোম সেন্টারেই জুনের ১৫ থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক রাজ্যে
মনোবিদদের অনেকের অভিমত করোনা আক্রান্ত অনেকেই মনে করছেন তারা আর সুস্থ হয়ে উঠবেন না। তাই অহেতুক ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে কেউ কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। আবার অনেকের মতে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করানোর জন্য পরিবারের লোকজনকে যেভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সেই বিষয়টিও মনের ওপর গভীর ছাপ ফেলেছে। সেই কারণেও কেউ কেউ আত্মঘাতী হতে পারেন বলে মনোবিদরা জানিয়েছেন।
করোনা আক্রান্তের মৃত্যু সংক্রান্ত আর একটি মর্মান্তিক খবরের কথা জানা গিয়েছে এই শহর কলকাতায়। গড়িয়াহাটের একটি চারতলা আবাসনের দ্বিতীয় তলায় নিজের ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন সন্ধ্যারানী মাহাতো। তিনি সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে খবর। ঐ আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর দাবি করোনা আক্রান্ত এই মহিলা নিজের ফ্ল্যাটের মধ্যেই মৃত অবস্থায় পড়ে থাকলেও তা অনেক পরে জানা গিয়েছে। কর্মসংস্থান এবং সামাজিক কারণে বৃদ্ধাবাসে পরিণত হওয়া কলকাতার বুকে করোনা আক্রান্ত নিঃসঙ্গ মানুষগুলোর চিকিৎসার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সমস্যা হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে জানা যাচ্ছে।