১৯ এপ্রিল, ২০২৪শুক্রবার

১৯ এপ্রিল, ২০২৪শুক্রবার

আমি কখনোই চাইব না, আমার লেখা শুধুমাত্র দক্ষিণ দিল্লির কয়েকজন ইংরাজি-জানা এলিট মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে থাকুক

তাঁর লেখায় উঠে আসে এক না-জানা সমাজের গল্প, মানুষের মধ্যেকার স্বাভাবিক সম্পর্কের কথা। একইসঙ্গে সেখানে ধ্বনিত হয় ধর্মীয় মেরুকরণ ও নব্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জোরালো স্বর। তিনি কৃতিকা পাণ্ডে। জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাঁচিতে হলেও বর্তমানে থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে। ২০২০ সালের ‘কমনওয়েলথ ছোটগল্প পুরস্কার’-এর শিরোপা উঠেছে তাঁরই মাথায়। তাঁর লেখা ‘The Great Indian Tee and Snakes’ গল্পটির জন্য এশিয়া অঞ্চলের বিজয়ী তো বটেই, বাকি চার আঞ্চলিক বিজয়ীকে হারিয়ে সেরার সেরাও হয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে ‘Dirty White Strings’ গল্পের জন্য পুশকার্ট পুরস্কারের জন্যেও মনোনীত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর লেখার অনুপ্রেরণা, ভাবনা, দর্শন, সবকিছু নিয়ে অকপট আলোচনায় মেতে উঠলেন  ‘ভিন্নসময়’এর প্রতিনিধি সোহম দাস এর সঙ্গে

 

  • কৃতিকা, প্রথমেই তোমাকে অশেষ অভিনন্দন জানাই এই সম্মানলাভের জন্য।

ধন্যবাদ, সোহম। অনেক ধন্যবাদ।

  • তোমার লেখার এই পুরো যাত্রাটা অর্থাৎ লেখায় আসা কীভাবে, লেখার পিছনের অনুপ্রেরণা ইত্যাদি নিয়ে যদি কিছু বলো।

সত্যি কথা বলতে কী, এটা খুব ধীরে ধীরেই শুরু হয়েছিল। যখন শুরু করেছিলাম, তখন স্বাভাবিকভাবেই সচেতন ছিলাম না। যখন বড় হয়ে উঠছি, অন্যান্য বহু জিনিসের মতো এটাও একটা বেশ সহজ ব্যাপার ছিল। ছোটবেলায় আমি খুব অল্পেই বোর হয়ে যেতাম, ফলে সর্বক্ষণই কিছু না কিছু অবসর-যাপনের উপকরণের প্রয়োজন হয়ে পড়ত। এমনিই লেখা শুরু করেছিলাম। যেমন স্কুল যেতে, পড়ার বই পড়তে বা হোমওয়ার্ক করতে ভালো লাগত, তেমনই অন্যান্য বই-টই পড়া আর লেখাও ভালো লাগত। তারপর যখন টিনএজে পৌঁছলাম, তখন আস্তে আস্তে গল্প-উপন্যাসের প্রতি, সার্বিকভাবে সাহিত্যের প্রতিই একপ্রকার আগ্রহ তৈরি হল। বিজ্ঞান ভালোবাসি, কিন্তু সাহিত্যের মধ্যে যেন এক অদ্ভুত আকর্ষণ রয়েছে। যখন লেখা শুরু করেছি, তখন কখনোই ভাবিনি যে এটা খুব বড়সড় ব্যাপার।

আরও পড়ুন
“যারা এই দেশটাকে শ্রম দিয়ে তৈরি করেছে, যাদের শ্রমের উপর প্রত্যেকটা মানুষ নির্ভর করে আছে, এই খাবারটা তাদের অধিকার’

তারপর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যখন পড়তে গেলাম, তখন কখনোই মনে হয়নি আমি এখানে থাকতে পারব বলে। সত্যিই আমার জায়গা কোথায়, সত্যিই আমার কী করা উচিত, সে সম্পর্কে ভাবনাচিন্তা করা শুরু করলাম। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পরিবেশটা আমার পক্ষে ছিল একেবারে বেমানান। ক্যাম্পাস প্লেসমেন্টে চাকরি পেয়েও যাইনি। ‘ইয়ং ইন্ডিয়া ফেলোশিপে’ অ্যাপ্লাই করেছিলাম, পেয়েও গিয়েছিলাম।

যখন শুরু করেছিলাম, তখন স্বাভাবিকভাবেই সচেতন ছিলাম না

 

সেটা ২০১৩ সাল। লেখক হতে চাই, সেটা ততদিনে মনস্থির করে ফেলেছি। ওদের ইন্টারভিউতে আমি বলেই দিয়েছিলাম যে, আমি ফেলোশিপ জয়েন করছি লেখক হওয়ার জন্যেই। অন্যান্য যারা এই ফেলোশিপে যায়, তারা মূলত শিক্ষালাভের উদ্দেশ্যেই যায়। আমি সেটার উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম তো বটেই, কিন্তু আমার একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল। সেটা বোধহয় আমাকে সাহায্য করেছিল। তারপর এডিনবারা ইউনিভার্সিটির ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ের সামার স্কুলের জন্য আমি নির্বাচিত হই। সেখানেই গিয়ে প্রথম জানতে পারি ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ের ক্ষেত্রে এমএফএ (মাস্টার অফ ফাইন আর্টস) ডিগ্রির ব্যাপারে। আমেরিকার ইউনিভার্সিটিতে সেই বিষয়ে অ্যাপ্লাই করি। এখনও অবধি আমার লেখার যাত্রাটুকু বলতে গেলে এটাই।

  •  এই সময়ের কোন কোন লেখকের লেখা তোমায় অনুপ্রাণিত করে?

এই সময়ের লেখক বলতে সমসাময়িক ভারতীয় লেখকদের মধ্যে যদি ধরি, তবে অরুন্ধতী রায়ের প্রভাব কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না। দেখো, এর কারণ এটা নয় যে, তিনি ‘God of Small Things’-এর মতো একটা বই লিখেছেন। সেটা অবশ্যই ইংরাজি ভাষায় লিখিত ভারতীয় সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল, কিন্তু একইসঙ্গে আমার মতো ঠোঁটকাটা একজন মেয়ে যে রাজনৈতিকভাবে কিছু বলতে চায়, তার কাছে তিনি একজন বিরাট বড় অনুপ্রেরণা। বামপন্থী, দক্ষিণপন্থী, উদারপন্থী সকলেই তাঁর তীব্র সমালোচনা করে, কিন্তু, রাজনীতিতে যে একজন মহিলা কণ্ঠও ভীষণভাবে শক্তিশালী হতে পারে, সেই জায়গাটা উনি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। আমাকে অন্তত তিনি ভাবিয়েছেন যে, আমিও তেমন একজন কেউ হয়ে উঠতে পারি যার কথা মানুষ শুনবে। ধরা যাক, কাশ্মীর নিয়ে আমি বললাম। ওঁর ব্যক্তিত্ব এবং জনসমক্ষে ওঁর যেরকম উপস্থিতি, সেই দুটোই আমাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছে। একটা পুঁজিবাদী পৃথিবীতে সাধারণ মানুষের যে দুর্দশা, সেই বিষয়ে উনি সবসময় ওঁর সুস্পষ্ট অভিমত দিয়েছেন।

আরও পড়ুন
“আমরা তো আতঙ্কিত, শুধু জাতিসত্তা দিয়ে চালাতে গিয়ে দেশটা শেষ হয়ে যাচ্ছে”

এছাড়া আমি রোহিন্তন মিস্ত্রির খুব বড় ভক্ত। উনি আবার একেবারেই অন্য ধরনের মানুষ। সেভাবে সাক্ষাৎকার দেন না, গণমাধ্যমেও তাঁকে দেখা যায় না, সম্পূর্ণরূপেই নিভৃতাচারী তিনি। কিন্তু তুমি যদি তাঁর লেখা পড়ো, দেখবে, গল্পের প্রতিটা চরিত্র গঠনে বা একটা কল্পনার জগত তৈরির পিছনে তিনি কতখানি পরিশ্রম ঢেলে দেন। তিনি যে অভিজ্ঞতার কথা লেখেন, সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে ভারতীয় সাহিত্যসমাজে অত চর্চা হয় না। আমি যখন এমএফএ-র অ্যাপ্লিকেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন ওঁর একটা ছোটগল্পের সংকলন পড়েছিলাম। আমাকে যেটা অবাক করেছিল, সেটা ওঁর একাগ্রতা। প্রতিটা চরিত্রের এমন নিখুঁত বিবরণ তিনি দেন, যেন মনে হবে, তিনিও ওদেরই একজন। অথচ, লেখায় আবেগের খুব সংযত প্রকাশ। অরুন্ধতী রায়ের মতো তিনি একেবারেই নন। অরুন্ধতী রায়ের লেখা ভীষণ কাব্যিক, সেটা অবশ্যই আমার নিজের খুব পছন্দের। কিন্তু একইসঙ্গে রোহিন্তন মিস্ত্রির লেখায় যে সংযম ফুটে ওঠে, সেটাও ভীষণ ভালো লাগে। তিনি স্তব্ধতার মাধ্যমেই অনেক কিছু বলে দিতে পারেন।

আমার একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল।

আমেরিকান লেখকদের মধ্যে টনি মরিসনের লেখা আমার খুব প্রিয়। এছাড়া, লাতিন আমেরিকার কথা যদি ধরি, সেখানে আমার প্রিয় দুই লেখক হচ্ছেন রবার্তো বোলানিও এবং ক্ল্যারিস লিস্পেক্টর। দক্ষিণ আফ্রিকার সাহিত্য আমাকে ভীষণ টানে, বিশেষত জোই উইকম্ব, যিনি এবছর কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি অ্যাওয়ার্ডের বিচারক। আমি নিজেও মনে করি, আমার মতো যাঁরা ঔপনিবেশিক-পরবর্তী যুগে বাস করছি, দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনীতি থেকে তাদের অনেক কিছুই শেখার আছে।

  • এত মানুষের লেখা তুমি পড়ো, সেই কারণে কৌতূহল থেকেই এই প্রশ্নটা করছি যে, বাংলা সাহিত্য সেভাবে পড়ার সুযোগ হয়েছে?

মহাশ্বেতা দেবীর লেখা পড়েছি। বাংলায় নয় অবশ্য, ইংরাজিতেই। ওঁর লেখার মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় ‘দ্রৌপদী’। গল্পটা একজন আদিবাসী রমণীকে নিয়ে। মহাশ্বেতা দেবী নিজে সারাজীবন ধরে এইসব মানুষদের জন্য কাজ করে গেছেন। আমার জন্মশহর রাঁচিতে বিরসা মুণ্ডার মূর্তিটা প্রথমে ছিল চেন দিয়ে বাঁধা প্রতিকৃতি, কারণ ব্রিটিশ তাঁকে সেভাবেই বন্দি করে রেখেছিল। মহাশ্বেতা দেবীই প্রথম প্রশ্ন তোলেন যে, এমন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর মূর্তির হাতে-পায়ে শেকল কেন পরানো থাকবে? এটা ঠিক যে ব্রিটিশরা তাঁকে কারারুদ্ধ করেছিল, তার জন্য তাদের প্রতি ধিক্কার, কিন্তু আমরা চাই আমাদের অবিসংবাদী নেতাকে বীরযোদ্ধা হিসেবেই স্মরণ করতে। সরকারকে বলে তিনি শেষপর্যন্ত মূর্তির হাত-পা থেকে শেকল সরাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই ঘটনাটা আমার উপর একটা দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছিল। মহাশ্বেতা দেবী আমাদের শিখিয়েছেন যে, সাহিত্যের প্রতি তোমার দায়বদ্ধতা কেবলমাত্র পড়াশোনা আর লেখালেখির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, সেখানে তোমাকে প্রয়োজনে প্রতিবাদ করতে পথেও নামতে হবে। কখনও কখনও মানুষের প্রয়োজনে সরকারের সঙ্গে মধ্যস্থতা করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী মানুষদের জন্য তিনি যা কাজ করেছিলেন, সেখান থেকেও অনেক কিছু শেখার আছে।

আরও পড়ুন
বৈদ্যনাথবাবুরই ছেলে বাপি অসুরের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, আর দুর্গার ভূমিকায় ছিলেন মালবিকা মিত্র

এখনকার বাংলা সাহিত্য সেভাবে পড়া হয়নি। তবে অরুণাভ সিনহার অনুবাদ কিছু পড়েছি। ওঁর অনুবাদে সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা পড়েছি। অরুনাভ সিনহা খুবই দক্ষ অনুবাদক, উনি জানেন একজন অনুবাদকের ভূমিকা কী। ওঁর সঙ্গে আমার বন্ধুত্বও আছে, অশোকা ইউনিভার্সিটিতেই আলাপ হয়েছিল। তাছাড়া, বাংলা সাহিত্য সেভাবে আমার পড়া নেই।

  • তুমি এর আগে দু’বার এই কমনওয়েলথ পুরস্কারের বাছাই তালিকায় স্থান পেয়েছিলে, না?

হ্যাঁ। ২০১৬ সালে ‘Dirty White Strings’-এর জন্য, আর ২০১৮ সালে ‘A Girl Called Wednesday’-র জন্য।

  • দু’বার বাছাই তালিকায় আসার পর শেষপর্যন্ত যখন এশিয়ার বিজয়ীও হলে, আবার সেরার সেরাও নির্বাচিত হলে, তখন ভালো তো অবশ্যই লেগেছিল। একজন লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই পুরস্কারপ্রাপ্তি আর অন্য কীভাবে তোমাকে সাহায্য করেছে?

সত্যি বলতে কী, আমি আশাই করিনি যে জিতব। এই যে তুমি এইমাত্র বললে, এর আগে দু’বার বাছাই তালিকায় আমার নাম ছিল, এটা জানো তো, আমার সঙ্গে প্রায়ই ঘটেছে। বাছাই পর্বে নাম উঠেছে, কিন্তু শেষপর্যন্ত জিততে পারিনি। সেদিক দিয়ে জেতাটা তো বেশ ভালো লাগছে। কিন্তু আমার জেতার খবরটা যেভাবে প্রভাব ফেলেছে, সেটা একেবারেই আমার কল্পনার বাইরে ছিল। কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশনও বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিল আমার এই যাত্রাপথটা দেখে। ইঞ্জিনিয়ার থেকে লেখক হওয়াটা ওঁদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় মনে হয়েছিল। অনেক অচেনা মানুষও আমাকে মেসেজ করে জানিয়েছেন, আমার গল্পটা তাঁদের পড়তে ভালো লেগেছে, গল্পটা তাঁদের অনুপ্রাণিত করেছে। তাঁরাও ইঞ্জিনিয়ার, তাঁরাও হয়তো অন্যরকম কিছু করতে চান, লিখতে চান। একইসময়ে আমার এটাও মনে হয়েছে, এখনও আমার লেখায় সেই বস্তুনিষ্ঠা বা স্বচ্ছতা আসেনি। কিন্তু আমার লেখার মধ্যে হয়তো কিছু ছিল, যার সঙ্গে মানুষ নিজেকে মেলাতে পেরেছে।

আমার জেতার খবরটা যেভাবে প্রভাব ফেলেছে, সেটা একেবারেই আমার কল্পনার বাইরে ছিল

কোনও কোনও পাঠক বলেছেন, গল্পটার ভঙ্গিমা অত্যন্ত সহজ অথচ গভীর। আমার মনে হয়, আমি লেখার কোনও প্রশিক্ষণ নিইনি বলেই হয়তো সেটা আমার লেখায় থাকে। তাই যদি আমার লেখার শৈলীতে কোনও ভুলত্রুটি বা অচেনা কিছুও থাকে, আমি চাইব তাকে রেখে দিতে। এটা বলতে পারো, পুরস্কারটা পাওয়ার ফলে একটা খুব বড় শিক্ষালাভ হল আমার। লেখার মাধ্যমে যত বেশি সম্ভব মানুষের কাছে পৌঁছতে চাই। আমি কখনোই চাইব না, আমার লেখা শুধুমাত্র দক্ষিণ দিল্লির কয়েকজন ইংরাজি-জানা এলিট মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে থাকুক। এই পুরস্কারের এটাও একটা বড় দিক যে, অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে লেখার মাধ্যমে পৌঁছে যায়। আর লেখা যত সহজ রাখা যায়, তত ভালো। সেখানে হয়তো তোমাকে ভাষার সঙ্গে এবং অন্যান্য অলংকার ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপস করতে হল, কিন্তু তা অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছবে। সেটাই তো দরকার। নয়তো আর কীসের জন্য লেখা।

আরও পড়ুন
দূরদর্শনের শ্রীনগর কেন্দ্রকে লিখলাম, আপনারা ওখানকার বেস্ট পজিশন থেকে সানরাইজের সিন তুলে পাঠান

  • এবার তোমার পুরস্কারজয়ী গল্পটার বিষয়ে আসব। সাম্প্রতি ভারতবর্ষে যে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিয়েছে, ধর্মীয় মেরুকরণ এবং সেখান থেকে সংঘটিত হওয়া গণহত্যা, সেটাকেই তুমি ‘The Great Indian Tee and Snakes’-এর কেন্দ্রীয় ঘটনা হিসেবে রেখেছ। এই পুরো প্লটটা কীভাবে তৈরি হল?

দেখো, প্লট কিন্তু সেভাবে নেই গল্পটাতে। দুজন মানুষের দেখা হচ্ছে এবং একজন পরে মারা যাচ্ছে, এই হচ্ছে গল্পের মূল কাহিনি। প্লট-কেন্দ্রিক সেভাবে নয় গল্পটা, বরং সেখানে একটা জোরালো বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে। প্লট যেটা পরে তৈরি হয়েছে, সেটা কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ের নয়। প্রাথমিকভাবে আমি বক্তব্য নিয়ে ভেবেছি। কালো টিপ পরা মেয়েটার বক্তব্য। আর গণপ্রহারে তাবরেজ আনসারির মৃত্যুর যে ঘটনা ঘটেছিল, সেটা নিয়ে আমি বিশেষভাবে লিখতে চেয়েছিলাম। মুসলিম তরুণদের যেভাবে গণপ্রহারের দ্বারা হত্যা করা হচ্ছে, সেটার বিরুদ্ধেও আমি লিখতে চেয়েছিলাম। মেয়েটির চরিত্রটা আমার কাছে প্রথম থেকেই আকর্ষণীয় ছিল, সেক্ষেত্রে আমি কেন একে গল্পের চরিত্র হিসেবে ব্যবহার করব না? তখনই আমার মনে হল, একজন হিন্দু মহিলার দৃষ্টিকোণ থেকে একজন মুসলিম তরুণের কথা লেখা, থিম হিসেবে অত্যন্ত উপযুক্ত হবে, কারণ সেটা ভীষণরকম র‍্যাডিক্যাল। হিন্দু মহিলাদেরকে নাকি মুসলিম পুরুষদের হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, কারণ তাঁদের বিরুদ্ধে তো সবসময়েই লাভ জিহাদের অভিযোগ ওঠে। এখানে আমি এভাবে আমার বক্তব্যটা দিতে চেয়েছি যে, আমি একজন হিন্দু মেয়ে, এবং আমি কার সঙ্গে থাকব বা কার থেকে আমাকে সাবধান হতে হবে, সেটা হিন্দু পুরুষরা কেউ ঠিক করে দেবে না।

এটা ভেবেই আমি গল্পটা নিয়ে এগিয়েছি, এবং আমাকে মাথায় রাখতে হয়েছে যে, আমার লক্ষ্য দুটো। প্রথমত, মুসলিম পুরুষরাও তো দোষে-গুণে মিলিয়েই মানুষ, সেটা বলা, এবং দেখানো যে, বর্তমানে ভারতের সামাজিক, রাজনৈতিক পরিবেশে তারা কতখানি নিরাপত্তাহীন। দ্বিতীয়ত, একজন হিন্দু মহিলাকেও আমি একজন মানুষ হিসেবেই দেখাতে চেয়েছি। কারণ, একটা ফ্যাসিস্ট, কর্তৃত্বপূর্ণ, স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা চললে বিভিন্ন মানুষ সেখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। ফলে, একটা কঠোর হিন্দুত্ববাদী রাজত্বে শুধু মুসলিমরাই নন, হিন্দু মহিলারাও আর নিরাপদ নন। সেই দুই সংগ্রামকেই একটা গল্পের মধ্যে ধরতে চেয়েছিলাম।

২০২০ সালের কমনওয়েলথ শর্ট স্টোরি পুরস্কার অনুষ্ঠান প্রচারিত হয় অনলাইনেই। সেখানে সেরার সেরা ঘোষণার সময়ে আবেগপ্রবণ কৃতিকা। ছবি সৌজন্যে: কমনওয়েলথ রাইটার্স অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল।

আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আমি প্রেমের গল্প ভীষণ ভালোবাসি। দুটো ছেলে-মেয়ের মধ্যে সহজ যে প্রেমের সম্পর্ক, সেরকম গল্প আমার খুবই প্রিয়। এছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে আমি দুটি মেয়ের মধ্যেকার যে স্বাভাবিক ভালোবাসার সম্পর্ক থাকে, সেটা নিয়ে চর্চা করেছি। তবে, সম্প্রতি এই ভিন্ন ধর্মের বা ভিন্ন মতের মানুষের মধ্যে ফুটে ওঠা যে প্রেম, সেই প্রেম নিয়ে আমার আগ্রহ বেড়েছে। লোকে হয়তো বলবে, আমরা তো হিন্দু, মুসলিমের গল্প প্রচুর পড়েছি, আবার কেন। কিন্তু তার মূল কারণ হচ্ছে, এই ব্যাপারটা ভারতীয় রাজনীতি থেকে কোনোদিন যাওয়ার নয়। কারণ, আমরা লেখকরা তো আর হিন্দু-মুসলিমের এই পুরনো কাসুন্দি নিয়ে ঘাঁটছি না, এসব রাজনীতিকরাই সর্বক্ষণ করেন। সুতরাং সেই সংকীর্ণ রাজনীতির জবাব হিসেবে আমরা এমন লেখাই হয়তো লিখতে পারি।

আরও পড়ুন
উনি আমাকে ডেকে বললেন,ভাবছি একটা মহালয়া অনুষ্ঠান কালারে করতে হবে,আপনি করবেন?

  • তোমার লেখায় মানুষের মধ্যেকার এই সম্পর্ক তো আমরা ভীষণভাবেই পাই। ‘Dirty White Strings’-এ যেমন বাবা-মেয়ের প্রেম, ‘A Girl Called Wednesday’-তে দুটি মেয়ের সম্পর্ক, ‘The Goddess Who Wants Out’-এও আবার দুটি মেয়ের সম্পর্ক। এই গল্পটার ক্ষেত্রে তুমি যেমন বললে যে, একটা রাজনৈতিক বক্তব্যের জন্য এমন একটি প্রেম দেখিয়েছ। তাহলে প্রশ্ন উঠছে, বাকি গল্পগুলোর ক্ষেত্রে সম্পর্কের এই যে একক উপস্থিতি, সেখানে মূলত কোন ধরনের ভাবনা কাজ করছে?

আমার তো মনে হয় সাহিত্যের মূল সুরই মানুষের মধ্যেকার এই সম্পর্ককে ঘিরে। দুই কি ততোধিক মানুষের সম্পর্কের আলোকেই তো সংজ্ঞায়িত হয় তাদের অস্তিত্ব, আর সেখান থেকেই সাহিত্য সৃষ্টি হয়। আমি নিজে ব্যক্তিগত জীবনে এই সম্পর্কের অনবরত টানাপোড়েনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছি। সেজন্যেই এই বিষয়টা আমার লেখায় বারবারই চলে আসে। কারণ সেখানে মানুষের জীবনের জটিলতার বিষয়টি লেখার একটা বড় পরিসর পাওয়া যায়। তাদের মতের মিল, অমিলের সংঘাতে যে নৈতিকতা, ভালোবাসা এবং বিদ্বেষের সংমিশ্রণে একটা আকর্ষণীয় আবরণ তৈরি হয়, সেটার বিষয়ে লেখার এখানে একটা বড় সুযোগ থাকে।

আমি নিজে ব্যক্তিগত জীবনে এই সম্পর্কের অনবরত টানাপোড়েনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছি

  • আগের একটি সাক্ষাৎকারে তুমি বলেছিলে, লেখকরা যেন নিজেদেরকে খুব গুরুত্বপূর্ণ না ভাবেন। আজকে ভারতবর্ষে যে ধরনের নব্য ফ্যাসিবাদের বাড়বাড়ন্ত, সেরকম পরিস্থিতিতে লেখকদের ভূমিকা তাহলে কী হওয়া উচিত?

প্রথম পয়েন্টটা নিয়ে আগে বলি। আমি মনে করি, লেখকরা যে মুহূর্তে নিজেদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবা শুরু করবেন, সেই মুহূর্তেই তাঁরা নিজেদেরকে সমাজের একটা বড় অংশের উর্ধ্বে তুলে ধরেন। যদি একজন লেখক এভাবে নিজেকে উর্ধ্বে তুলে ধরেন, সেক্ষেত্রে তিনি কোনোভাবেই সকলের জন্য শিল্প সৃষ্টি করতে পারবেন না। তোমাকে মনে রাখতে হবে, তুমিও তাদেরই একজন। তোমারও তাদের মতোই ভুলত্রুটি হয়। তুমি যে চরিত্র তৈরি করছ তোমার লেখায়, সেখানে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরতে গেলে তোমাকে তো তাদের মতো করেই ভাবতে হবে।

আরও পড়ুন
মৃত্যুর ষাট বছর পরেও শিকাগো ধর্ম মহাসভা থেকে ডাক পেয়েছিলেন রামদুলাল পাল?

এবার তোমার দ্বিতীয় প্রশ্নটায় আসি। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে একজন লেখকের ভূমিকা এককথায় বলতে গেলে, বাস্তব জগতে বিচরণ করা। তোমার আশেপাশে কী ঘটছে, তার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখাটাই এখন বেশি করে প্রয়োজন। অনেক সাহিত্যিকই মনে করেন, লেখা ছাড়া সাহিত্য-চর্চাই তাঁদের অন্যতম কাজ। কিন্তু আমার মনে হয়, প্রকৃত লেখক তিনিই, যিনি কখনও চারপাশের ঘটনার প্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপ না করে রাস্তায় হাঁটেন না। চারপাশের সমস্ত শব্দ, দৃশ্য, গন্ধ, সমস্তকিছুর প্রতিই আমাদের আরও বেশি করে সজাগ থাকা প্রয়োজন। বেশিরভাগ সাহিত্যিকের ক্ষেত্রে এটা হয়তো খুব স্বাভাবিকভাবেই আসে। সাহিত্যিক হয়ে ওঠার পিছনে এটাই হয়তো অন্যতম কারণ। সবকিছু দেখে চুপ করে আমরা থাকতে পারি না, ভেতরে ভেতরে একটা তীব্র টানাপোড়েন চলে। মানুষের অভিব্যক্তিতে প্রতিনিয়ত একটা পরিবর্তন আমাদের চোখে পড়ে। সেজন্যেই আমার মনে হয়, যেকোনো সময়ে দাঁড়িয়েই তোমার সমাজের আশেপাশে কী ঘটছে, সেসবের প্রতি মনোযোগী হওয়াটাই আমাদের কাম্য।

  • তোমার লেখা প্রবন্ধ ‘Thirty-One Things About the Lime of Control’-এর ক্ষেত্রেও সেই সময়ের প্রতি মনোযোগের প্রসঙ্গ ঘুরেফিরে আসছে। ৩৭০ ধারা বাতিল নিয়ে যে আমাদের দেশের অধিকাংশ সুবিধাভোগী মানুষ উদাসীন এবং রীতিমতো খুশি। সেই প্রসঙ্গ তোমার লেখায় উঠে আসছে। তবে এই যে একত্রিশটা বিষয়ের একটা তালিকা দিয়ে তুমি প্রবন্ধটাকে সাজালে, এমন একটা অভিনব শৈলীর অবতারণার পিছনে কারণ কী?

তালিকা জিনিসটা আমার বেশ প্রিয়। কী জানি, হয়তো ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী ছিলাম বলে। এই ১, ২, ৩, ৪ করে লেখার ধাঁচটা আমার বেশ ভালো লাগে। কিন্তু ফিকশনের ক্ষেত্রে তো এটা সবসময় ব্যবহার করা যায় না, কারণ সেখানে সীমাবদ্ধতা থাকে। কিন্তু এই প্রবন্ধটা যখন আমি লিখতে শুরু করলাম, তখন বুঝলাম এই তালিকাভিত্তিক ধাঁচটা এই লেখাটার জন্যে একেবারে উপযুক্ত। কারণ, এখানে আমি আমার মাসতুতো ভাই, যে একেবারেই বাচ্চা, তাকে একটা অত্যন্ত জটিল বিষয় বোঝাতে যাচ্ছি। সেজন্যেই পুরো ব্যাপারটা আমাকে ভেঙে ভেঙে বোঝাতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন
‘উপার্জনের তো অবশ্যই দরকার আছে, কিন্তু শিক্ষার উদ্দেশ্য কেবলই সেটা যেন না নয়’

আবার অন্যভাবে দেখতে গেলে, এটা তো শুধুমাত্র আমি আমার ভাইয়ের জন্য করছি না, আমি করছি আমার নিজের জন্যেও। এই যে বাস্তবে আমরা পুরো ব্যাপারটা নিয়ে একটা ধোঁয়াশার মধ্যে বাস করছি, সেটাকে অনেকটা স্পষ্ট করে তুলতে চেয়েছিলাম। কাশ্মীরে সত্যিই কী হচ্ছে, কীই বা সেখানকার রাজনীতি, সেই বিষয়ে ভারতের অন্যপ্রান্তের মানুষজন একেবারেই কিছু জানেন না বা জানতে চান না। আমি শুধু সেই জায়গা থেকেই পুরো সত্য ইতিহাসটা লিখতে চেয়েছিলাম, আমি এখানে কোনোরকম রাজনৈতিক ধারাবিবরণী দিতে চাইনি। কারণ, আমি সাংবাদিকও নই বা রাজনৈতিক বিশ্লেষকও নই। দেখো, আমি তো দেখতে গেলে উত্তর ভারতের একজন উচ্চবর্ণের মহিলা, সেখানে আমার জগতের মধ্যে কাশ্মীর আসলে একটা বাস্তব। সেই ভাবনা থেকেই আমি প্রবন্ধটা নিয়ে এগিয়েছি। লেখার আগে একটা তালিকা তো তৈরিই থাকে যে, কী কী লেখা হবে। এখানে এই একত্রিশটা বিষয়ের তালিকা কেবল অনুচ্ছেদে রূপান্তরিত হয়েছে।

আমার মনে হয়, প্রকৃত লেখক তিনিই, যিনি কখনও চারপাশের ঘটনার প্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপ না করে রাস্তায় হাঁটেন না।

  • প্রবন্ধে যে বিষয়টা তুমি উল্লেখ করেছ, ওই একটি বাচ্চা, যে কিনা রাজনীতির কিছুই বোঝে না, সে দেখছে তার বাবা-মা কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার কেড়ে নেওয়ায় রীতিমতো আনন্দ করছে, এটা তো খুবই চিন্তার

একদমই তাই। এসবের ব্যাপারে জানতে গেলে বাচ্চাটা একমাত্র তার বাবা-মা’র কাছ থেকেই জানবে। সেখানে এমন একটা পরিস্থিতি তো খুবই ভয়ের। সেজন্যেই এখানে মানুষকে সঠিক বিষয়টা জানানোর ক্ষেত্রে আমাদের একটা দায়িত্ব চলে আসে।

  • একদম শেষ প্রশ্ন। তোমার এই মুহূর্তের লেখালেখি নিয়ে জানতে চাইব।

এই মুহূর্তে আমি একটা উপন্যাস লিখছি। এটাও ঝাড়খণ্ডেরই কাহিনি, তবে সমসময়ের নয়। আর বেশি কিছু বলা কঠিন, কারণ আমি এখন রয়েছি উপন্যাসটার একদম মাঝখানে। আমি নিজেই এখনও ঠিকমতো জানি না ব্যাপারটা কী দাঁড়াবে। তবে আশা করছি, খুব তাড়াতাড়িই শেষ হয়ে যাবে এবং অনেক মানুষ এটা পড়তে পারবেন।

ছবি সৌজন্যে: কৃতিকা পাণ্ডে

Related Articles

5 COMMENTS

  1. খুব মনোজ্ঞ একটি সাক্ষাৎকার। এই স্বল্প পরিসরেই একটি মধ্যকুড়ির ভারতীয় আধুনিকার এত স্বচ্ছ্ব ও ভণিতাহীন রাজনৈতিক অবস্থান দেখে চমৎকৃত হলাম। এমন মুখোশহীন আপোসহীন প্রতিবাদ এখনকার লেখকলেখিকাদের মধ্যে গভীরভাবে অলভ্য, ততোধিক কাম্য। বিশেষতঃ উত্তর ভারতে, কারণ জনসংখ্যায় প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতীয়ের মনোভাব তথা সংকীর্ণতাও তারা প্রতিফলিত করে আসছেন যুগযুগান্ত ধরে। আর, মুগ্ধ হলাম অনুবাদের নৈপুণ্য দেখে। এত সুন্দর সাক্ষাৎকার বক্তব্যের গুণে তো বটেই, তার বাংলায় রূপান্তরের মুন্সিয়ানার সূত্রেও আজকাল খুঁজে পাওয়া ভার। অভিনন্দন সোহম।

    • কৃতিকার সাক্ষাৎকার নিয়ে আমিও খুব উৎসাহী ছিলাম। ওর ‘The Great Indian Tee and Snakes’ একটা কাল্ট গল্প। ‘Dirty White Strings’-ও অদ্ভুত এক সমাজের টানাপোড়েনের কথা বলে। আর এত সহজ ওর লেখার ভঙ্গি যে সত্যিই খুব টানে। সেজন্যেই ওর সঙ্গে কথা বলার জন্য মুখিয়ে ছিলাম। তুমি পড়েছ, এবং পড়ে এমন সুন্দর মন্তব্য করেছ, তার জন্য তোমায় কোলাকুলি জানালাম। আর ষোল দিন পরে জবাব দিলাম, প্লিজ কিছু মনে কোরো না। আমার দেখা হয়নি। ও হ্যাঁ, কৃতিকা মধ্যকুড়ি নয়, ত্রিশ ছুঁইছুঁই, আমার চেয়ে বছর তিনেকের বড়।

    • তবে মুখোশহীন, আপসহীন প্রতিবাদ এখনকার লেখক-লেখিকাদের মধ্যে ‘গভীরভাবে অলভ্য’, এই কথাটা একটু অতিকথন হয়ে যাচ্ছে হয়তো। দুর্লভ বটে, কিন্তু অন্তত বাংলার বাইরে অসম, কাশ্মীর, কেরালায় যে ধরনের সময়োচিত লেখা হচ্ছে, তা ভীষণভাবে শাসকের রক্তচক্ষুকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ছে। আর তা নিয়ে বেশ বড় সংখ্যক তরুণ লেখক-লেখিকা নিজেদের কলম ধরছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

7,808FansLike
20FollowersFollow

Latest Articles

error: Content is protected !!