সবে শুক্রবার মুকুল রায় তার পুরানো দল তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। এরইমধ্যে বিজেপিতে ভাঙ্গনের সুর ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস শনিবার জানিয়ে দিলেন মুকুল রায়ের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সম্পর্ক আছে। এমনকি তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনাও নস্যাৎ করে দেননি তিনি। এর পাশাপাশি নোয়াপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল সিং জানিয়েছেন মুকুল রায়ের দলত্যাগের ফলে বিজেপির বড়ো ক্ষতি হবে। তিনিও দলবদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি।
বিশ্বজিৎ দাস ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। পরে মুকুল রায়ের হাত ধরে তিনি বিজেপিতে আসেন। যদিও এবারের বিধানসভা ভোটের আগে তার তৃণমূলে ফিরে যাওয়া নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মুকুল রায়ের হস্তক্ষেপে তিনি বিজেপিতে থেকে যান। বিজেপি তাকে এবার বাগদায় প্রার্থী করে। তিনি সেখান থেকে জয়ী হয়েছেন। তবে শুক্রবার বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বৈঠকে দিলীপ ঘোষ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তিনি আসেননি। শোনা যাচ্ছে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বিশ্বজিৎ দাসের সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়। মুকুল রায় প্রসঙ্গে তিনি শনিবার মুখ খোলেন। জানান তিনি মুকুল রায়ের হাত ধরেই কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে এসেছিলেন। আবার তার হাত ধরেই তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যান। তাই মুকুল তৃণমূলে ফিরে যাওয়ায় তিনি গোটা বিষয়টি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছেন। এছাড়াও তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে মুকুল’দার পারিবারিক সম্পর্ক আছে। মমতাদির সঙ্গেও আমার সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো।”
আরও পড়ুন
২৬ জুন দেশজুড়ে ‘ক্ষেত বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও’ কর্মসূচির ডাক আন্দোলনরত কৃষকদের
বিশ্বজিৎ দাসের মন্তব্য থেকে পরিষ্কার তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা ভালোভাবেই শুরু করে দিয়েছেন তিনি। এদিকে মুকুল রায় বিজেপি ছাড়ার আর পরের দিনই বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি তপন সিনহা ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন বিজেপিতে আর থাকতে চান না। উল্লেখ্য এই ব্যক্তির সঙ্গে মুকুল রায়ের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তিনি বিজেপির অভ্যন্তরে মুকুল ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ছিলেন যদিও গেরুয়া শিবির তপন সিনহার দলত্যাগকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। তাদের বক্তব্য যারা ক্ষমতার লোভে বিজেপিতে এসেছিল, দল রাজ্যের ক্ষমতা দখল করতে পারেনি বলে তারাই আবার তৃণমূলের ফিরে যাচ্ছে।
এদিকে অর্জুন সিং এর ভায়রাভাই তথা নোয়াপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল সিং বরাবর মুকুল ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এই পরিস্থিতিতে তিনি জানিয়েছেন মুকুল রায়ের মত বড় মাপের নেতা বিজেপি ছাড়ায় দল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি তৃণমূলে যাচ্ছেন কিনা এই প্রশ্ন করা হলে সুনীল সিং বলেন, “ভবিষ্যতে কি হবে তা এখনই আমি বলতে পারব না।” সূত্রের খবর রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে সম্ভবত খুব দ্রুত সুনীল সিং তৃণমূলে ফিরে যাবেন। এমনিতেও এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি জিততে পারেননি।
এই পরিস্থিতিতে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের তৃণমূল নেতা তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থও ভৌমিক জানিয়েছেন, “তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যারা গিয়েছিল তাদের মধ্যে কারোর কারোর বোধোদয় হচ্ছে দেখে ভালো লাগছে। তবে দল কাকে ফিরিয়ে নেবে আর কাকে নেবে না সেটা সম্পূর্ণ উচ্চ নেতৃত্বের বিষয়।”