করোনা টিকা নিয়ে ফের রাজ্যগুলির প্রতি এক দফা নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এই নতুন নির্দেশিকায় রাজ্যগুলিকে টিকা মজুতের পরিমাণ ও সেগুলি কোথায় কিভাবে সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে তা প্রকাশ্যে জানাতে নিষেধ করা হল। এই সমস্ত তথ্যকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সংবেদনশীল আখ্যা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন এ সমস্ত তথ্যকে কেন্দ্র সংবেদনশীল মনে করছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ইলেকট্রনিক ভ্যাকসিন ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্ক নামক একটি অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্র করোনা টিকা সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়ার উপর নজরদারি চালায়। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কোথায় কত টিকা মজুত আছে, কত টিকা ব্যবহার করা হল তা সহজেই জেনে যায় কেন্দ্র। সেইসঙ্গে একেবারে মহাকুমা স্তর পর্যন্ত কোথায় কত তাপমাত্রায় টিকার সংরক্ষণ করা হচ্ছে সে সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চলে আসে কেন্দ্রের হাতে। টিকাকরন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য এই অনলাইন প্লাটফর্ম প্রতিটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ব্যবহার করতে পারে। সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্য সরকার এই পোর্টাল ব্যবহার করেই তাদের হাতে কত টিকা মজুত আছে তা নিয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছে। মূলত কেন্দ্র পর্যাপ্ত টিকা পাঠাচ্ছে না এটা বোঝাতেই রাজ্যগুলি এই সংক্রান্ত বিবৃতি দেয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
আরও পড়ুন
নিউটাউনে শুটআউট, এসটিএফের গুলিতে মৃত দুই গ্যাংস্টারের
বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নির্দেশিকা পাঠিয়ে এই সংক্রান্ত তথ্যকে সংবেদনশীল বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্র জানিয়েছে সুষ্ঠুভাবে টিকাকরন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য ওই অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে নিয়ে সংবাদমাধ্যম, রাজ্যের অন্য কোনও সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কারোর হাতেই তুলে দেওয়া যাবে না। টিকাকরন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে চালাতে কেবলমাত্র এই সংক্রান্ত তথ্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যবহার করার অধিকার আছে বলেও ওই নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সংক্রান্ত তথ্যগুলি কোনও রাজ্য ব্যবহার করতে চাইলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আগাম ছাড়পত্র নিতে হবে বলেও জানানো হয়।
প্রশ্ন উঠছে কোথায় কত টিকা মজুত আছে তা কেন সাধারণ মানুষকে জানতে দিতে চায় না কেন্দ্র। তবে কি টিকাকরণ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বারবার যে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে তা ধামাচাপা দিতেই তাদের এই উদ্যোগ? নাকি টিকাকরণের যাবতীয় দায়িত্ব নিজেদের হাতে নিয়ে নেওয়ার ফলে তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠতে পারে তা আগাম আঁচ করে আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক? প্রকৃত ঘটনা যাই হোক কেন্দ্রের এই নতুন নির্দেশিকার ফলে টিকাকরন প্রক্রিয়া নিয়ে ফের একপ্রস্থ প্রশ্ন চিহ্ন উঠে গেল।