রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটজনক বলে স্বীকার করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের জন্য অক্সিজেনের বরাদ্দ বাড়ানোর অনুরোধ করেছেন। জানিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে মুখ্যসচিব সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছেন। আশঙ্কা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর জায়গায় চলে যেতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য থেকে অক্সিজেন নিয়ে চলে যাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে দৈনিক অক্সিজেন চাহিদা ৪৭০ মেট্রিক টন। আগামী ৭-৮ দিনের মধ্যে এই চাহিদা বেড়ে ৫৫০ মেট্রিক টনে পৌঁছে যাবে বলে তার আশঙ্কা। সেই জন্য দ্রুত জরুরী ভিত্তিতে এ রাজ্যের অক্সিজেন বরাদ্দ বাড়িয়ে দৈনিক ৫৫০ মেট্রিক টন করার অনুরোধ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দাবি কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক ৩৯০ মেট্রিক টন অক্সিজেন সরবরাহ করছে। মুখ্যমন্ত্রীর হিসেব মতো পশ্চিমবঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতিতেই দৈনিক ৮০ মেট্রিক টন অক্সিজেনের ঘাটতি আছে।
আরও পড়ুন
পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূল সমর্থকদের হাতে কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী আক্রান্ত বলে দাবি বিজেপির
মুখ্যমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে বলেন, “আগামী ৭/৮ দিনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটজনক জায়গায় গিয়ে পৌঁছবে। কেন্দ্র আমাদের কাছ থেকে অক্সিজেন নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমাদের অক্সিজেন বরাদ্দ বাড়ানো হোক। মুখ্য সচিব এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলেছে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা থেকে পরিষ্কার আগামী দিনে রাজ্যে করোনা সঙ্কট যে আরও ঘোরালো হয়ে উঠতে চলেছে সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। সেজন্যেই আগাম ঘর গুছিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।
উল্লেখ্য পশ্চিমবঙ্গের বর্তমানে দৈনিক অক্সিজেন চাহিদা ও যোগানের যে ঘাটতি থাকছে তা স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে নিয়ে কোনরকমে সামাল দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা মত অক্সিজেনের চাহিদা যদি দৈনিক ৫৫০ মেট্রিক টনের সীমা গিয়ে ছোঁয় তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যাবে। আপাতত পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের সঙ্কট না ঘটলেও খোলাবাজারে অক্সিজেন সঙ্কট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না করলে বাংলার হাসপাতালগুলিতে দিল্লির মত অক্সিজেনের অভাবে করোনা আক্রান্তের মৃত্যু স্রেফ সময়ের অপেক্ষা মাত্র।