পাঞ্জাবের বিধানসভা ভোট আর আট মাস বাকি। তার আগে উত্তর ভারতের এই রাজ্যে রাজনৈতিক ভাঙা-গড়ার খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার তথা পাঞ্জাবের প্রাক্তন মন্ত্রী নভজ্যোত সিং সিধুর বিদ্রোহের কারণে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং যথেষ্ট চাপে আছেন। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে এই দুই শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে মিটমাট করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু তার আগেই নিজের পাল্লা জোরদার করার খেলায় নেমে পড়েছেন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ অমরিন্দর সিং। আজ আম আদমি পার্টির দু’জন বর্তমান বিধায়ক ও এক বহিস্কৃত বিধায়ককে কংগ্রেসে যোগদান করালেন তিনি।
পাঞ্জাবে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সমস্যা মেটাতে সোনিয়া গান্ধী উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত, মল্লিকার্জুন খাড়গে ও জেপি আগারওয়ালকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটির সঙ্গে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বৈঠক করার কথা পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর। তার আগে পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টির ঘর ভাঙলেন তিনি। সুখপাল সিং খইরা এর আগে কংগ্রেসে ছিলেন। কিন্তু ২০১৫ সালে কংগ্রেস ছেড়ে আপে যোগ দেন। পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির টিকিটে জয়ী হয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হন। কিন্তু আপের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে দল ত্যাগ করেন। পাঞ্জাবি একতা পার্টি নামে নিজের একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি কংগ্রেসের ফিরে আসার জন্য আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছিলেন। অবশেষে আজ অমরিন্দর সিং এর হাত ধরে তিনি নিজের পুরনো দল কংগ্রেসের ফিরে আসেন।
আরও পড়ুন
বণিকসভার বৈঠকে রেস্তোরাঁ খোলার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, খুচরো বাজার খোলা থাকার সময়সীমা বাড়লো
সুখপাল সিং খাইরা কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সময় সঙ্গে করে আপের আরও দু’জন বিধায়ক পিরমল সিং ধৌলা ও জগদেব সিং খামালুকে নিয়ে আসেন। বৈঠকের পর এই দু’জন আপ বিধায়কও কংগ্রেসে যোগ দেয়। পাঞ্জাবের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে নিজের শিবিরের দাবি জোরদার করার জন্যই আপের ঘর ভাঙতে উদ্যোগী হয়ে উঠেছেন অমরিন্দর সিং। তবে গোল বেধেছে অন্য জায়গায়। গতবারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বলেছিলেন এটাই তার শেষ নির্বাচনী লড়াই। এরপর তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন। কিন্তু কংগ্রেসের পক্ষে এবার হাওয়া অনুকূল বুঝে তিনি আবারও ভোট ময়দানে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই কারণেই নভজ্যোত সিং সিধু শিবিরের সঙ্গে তার দূরত্ব আরও বেড়েছে।
গত দু’দিনে সোনিয়া গান্ধীর তৈরি করে দেওয়া তিন সদস্যের কমিটি পাঞ্জাবের ৫০ জন বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেছে। বিধায়কদের একাংশ ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং এর নেতৃত্বেই নির্বাচনে লড়াই করার পক্ষে সওয়াল করেন। তবে বেশকিছু বিধায়ক নেতৃত্বে পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে। এখন কংগ্রেস হাইকমান্ডের কাছে চ্যালেঞ্জ হল পাঞ্জাব কংগ্রেসের অভ্যন্তরীন বিদ্রোহ থামিয়ে দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোট ময়দানে নামানো।