সবেধন নীলমণির মত পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস সরকার চালাচ্ছে। এছাড়া ঝাড়খন্ড, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্রে শরিক দলের দ্বারা পরিচালিত সরকারে আছে তারা। এরমধ্যে পাঞ্জাবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচন কংগ্রেসের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পাঞ্জাব যদি হাতছাড়া হয়ে যায় তবে দেশে আর মাত্র দুটি রাজ্য কংগ্রেসের সরকার থাকবে। বিরোধী শিবিরেও তখন কংগ্রেস আর বিশেষ গুরুত্ব পাবে না। কিন্তু পাঞ্জাবে কংগ্রেসের সাংগঠনিক অবস্থা তুলনায় অনেকটাই ভালো জায়গায় আছে। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে পঞ্চ নদীর জলে শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির নৌকা ডুবে যেতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা। এই অবস্থায় কংগ্রেসের যুবরাজ আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ময়দানে নামতে হয়েছে রাহুল গান্ধীকে। যদিও সমাধানসূত্র অধরা।
চলতি সপ্তার শুরু থেকেই রাহুল গান্ধী আলাদাভাবে পাঞ্জাবের শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। ইতিমধ্যেই তিনি পাঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতি সুনীল জাখর সহ একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। এমনকি পাঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী তথা অকালি দলের সভাপতি সুখবীর সিং বাদলের খুড়তুতো ভাই মনপ্রীত সিং বাদলের সঙ্গেও কথা বলেছেন। জানা গিয়েছে খুব শীঘ্রই পাঞ্জাবের বিদ্রোহী নেতা নভজোৎ সিং সিধু সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসতে পারেন রাহুল। কিন্তু তার মাথাব্যথা বেড়েছে মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং কে নিয়ে। গত তিনদিন দিল্লিতে থাকা সত্ত্বেও রাহুল বা সোনিয়া কারোর সঙ্গেই দেখা করেননি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন
ভারতে টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে চাইছে সরকার! অসমের মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপকে ঘিরে প্রশ্ন জোরদার হল

রাহুল নিজের মত করে সক্রিয় হয়েছেন। আবার সোনিয়া গান্ধী পাঞ্জাব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে হরিশ রাওয়াতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। যাদের কাজ পাঞ্জাবের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়া। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সোনিয়া গান্ধীর তৈরি করে দেওয়া কমিটির প্রতি কি রাহুলের আস্থা নেই? তাহলে তিনি কেন হঠাৎ করে মাঝরাস্তায় সক্রিয় হয়ে উঠলেন?
কিন্তু হিসেব বলছে এইভাবে সক্রিয় না হয়ে উপায় ছিল না রাহুল গান্ধীর। কারণ পাঞ্জাবে যদি কংগ্রেসের ক্ষমতা চলে যায় তবে দলের অভ্যন্তরে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বেন তিনি। নিজে খাতায়-কলমে দলের সভাপতি না থাকলেও কংগ্রেসের অভ্যন্তরে তিনিই যে শেষ কথা বলেন এটা সকলেই জানে। এই অবস্থায় পাঞ্জাবের মত রাজ্যে কংগ্রেস হেরে গেলে তা তারই ভাবমূর্তিতে আরও এক পোঁচ কালি লেপে দেবে।
আরও পড়ুন
সিআইএ’র অভ্যুত্থান সফল করতে সিআইএ ও এমআইসিক্স একযোগে করেছিল বন্ধু দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত

নভজোৎ সিং সিধু কি করবেন পাঞ্জাব সমস্যায় এটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। পাঞ্জাবের এই বিদ্রোহী নেতা টানা গান্ধী পরিবারের প্রশংসা করে আসছেন। কিন্তু শোনা যাচ্ছে তিনি তলে তলে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলেছেন। হয়ত ভোটের মুখে শিবির বদল করে আম আদমি পার্টিতে ঝাঁপ দিতে পারেন। সব মিলিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠলেও রাহুল গান্ধীর কাজটা খুব একটা সহজ নয়!