রামায়ণের কুম্ভকর্ণের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। লঙ্কার রাজা রাবণের ভাই ছিলেন। তিনি টানা ছয় মাস ঘুমাতেন তারপর আবার কিছুদিন জেগে থাকতেন, ফের ঘুমিয়ে পড়তেন। তবে এবার আধুনিক যুগের কুম্ভকর্ণের সন্ধান পাওয়া গেল রাজস্থানের নাগৌর জেলায়।নাগৌর জেলার ভাদোয়া গ্রামে বসবাস করেন বছর ৪২ এর পুরক্ষা রাম। তিনি একটি মুদিখানা দোকানের মালিক। কিন্তু মাসে মাত্র ৫ দিন ওই মুদিখানা দোকানটি চালান। প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে বাকি ২৫ দিন কেন ওই মুদিখানা দোকানটা বন্ধ থাকে? এখানেই গোটা ঘটনাটির রহস্য লুকিয়ে আছে। মাসে বাকি ২৫ দিন ওই ব্যক্তি ঘুমিয়ে থাকেন, তাই দোকান খোলার সুযোগ পান না।
আসলে রাজস্থানের এই ব্যক্তি অ্যাক্সিস হাইপারসোমনিয়া নামে একটি বিরল মানসিক রোগে আক্রান্ত। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অস্বাভাবিক পরিমাণে ঘুমোতে শুরু করে। পুরক্ষারামের যখন ১৯ বছর বয়স তখন তিনি এই রোগে আক্রান্ত হন। তবে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তার ঘুম এতটা প্রবল ছিল না। সেই সময় দিনে ১৮ ঘন্টার কাছাকাছি ঘুমাতেন। কিন্তু ২০১৫ সালের পর থেকেই তিনি টানা ৫-৭ দিন ঘুমোতে শুরু করেন। সেটাই এখন বাড়তে বাড়তে মাসে ২৫ দিনে গিয়ে ঠেকেছে। তার পরিজনেরা জানিয়েছেন এই ব্যক্তি বছরে ৩০০ দিন ঘুমিয়ে থাকেন!
আরও পড়ুন
গাড়ি দুর্ঘটনায় সাময়িক মৃত্যুর পর নরক ঘুরে আসার দাবি মার্কিন পুলিশ অফিসারের
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এই অদ্ভুত অসুখের চিকিৎসা খুব একটা দেখা যায় না। তাই কেউ এই অসুখে আক্রান্ত হলে সে ক্রমাগত ঘুমোতে থাকে। তবে জোর করে ওই ব্যক্তিকে জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করলে তার প্রবল মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়। তাই বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যরা তার ঘুমে কোনও বাধা সৃষ্টি করেন না। এমনকি ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে খাবার ও জল খাইয়ে দেওয়া হয়। তবে তার মা কানোয়ারী দেবী ও স্ত্রী লিচমি দেবীর আসা খুব দ্রুত পুরক্ষা রাম সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবেন।