আগের পর্বে সাওতা মালীর রচনা ছাড়াও নামদেবের রচনা অবলম্বনেও আলোচনা এগিয়েছে। সন্তদের যাপনের ফসল তাঁদের বচনগুলি কীভাবে ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরোধী স্বর হয়ে উঠেছে, সেইটিই পরখ করে দেখা হয়েছিল। এবারেও তার রেশ কিছুটা রয়েছে। সন্ত তুকারামের জীবনে ব্রাহ্মণদের শত্রুতার একাধিক উদাহরণ ছাড়াও এসেছে সন্ত একনাথের ‘ভারুড়’এর কথাও। যেখানে ভাগবতধর্মী ভক্ত মহার হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণের প্রকৃত শিক্ষক। সন্তজনের মুক্তধারায় ধারাবাহিকে রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়গুলি নিয়েই এবার দ্বাদশ পর্বে আলোচনা করেছেন।
নামদেবের মতো তুকারামকেও (১৫৯৮ বা ১৬০৮-১৬৫০) ব্রাহ্মণদের বিরোধিতার শিকার হতে হয়েছিল। কিন্তু সে পনঢরপুরের মন্দিরে প্রবেশাধিকার নিয়ে বা সেখানকার ‘বড়বা’ (পূজারি ব্রাহ্মণ)-দের হাতে লাঞ্ছনা নয়। তুকারামের পরিবার ছিল গোসাবি সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। ধার্মিক জীবনযাত্রার কারণে গোসাবিরা হিন্দুসমাজে সম্মাননীয় ছিলেন। সে-বিরোধিতা অন্য গোত্রের, তা নির্ভেজাল শত্রুতাই।
নানাদিক থেকেই তিনি বিপর্যস্ত হয়েছিলেন। তাঁর জীবনের ঘটনাবলি লক্ষ করলেই তা স্পষ্ট হয়। অল্পবয়েসে মা-বাবার মৃত্যু, সাংসারিক দায়দায়িত্বে নাজেহাল অবস্থা, আকালে সর্বস্বান্ত হওয়া ছাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও রূঢ় ব্যবহার জুটেছিল। নিজের অঞ্চল দেহু (পুনে জেলা) ছাড়াও সাধারণভাবে যেসব জায়গায় তিনি কীর্তন করতে যেতেন, সেগুলির মধ্যে পুনে জেলারই অন্তর্গত লোহেগাঁও অঞ্চলও ছিল। সেখানে একদল দুর্জন একবার তাঁর গায়ে গরম জলও ঢেলে দেয়। সে নিয়ে তাঁর রচনাও আছে— ‘জলে মাঝী কায়া লাগলা বোণবা। ঘাঁওরে কেশবা মায়বাপা।’— হে কেশব, মা-বাপ আমার, জলে অঙ্গ জ্বলে যায়, তুমি এর বিহিত করো কিছু। আবার মম্বাজি গোসাবির মতো পেশাদার প্রবচনকারীর দুরভিসন্ধির শিকার হওয়া ছাড়াও, রামেশ্বর ভট্ট নামে এক ব্রাহ্মণের শত্রুতার কথাও জানা যায়।

আরও পড়ুন
লোকজীবনে প্রচলিত এই ধরনের গল্পকথা পাকেপ্রকারে বিদ্বজ্জনরাও একেবারে খারিজ করতে পারেন না
তুকারামের কীর্তনের আসরে বেশি লোকের সমাবেশ হত। মম্বাজির প্রবচন শুনতে কম লোকজন হওয়ায় তাঁর রোজগারে টান পড়তে থাকে। এই নিয়ে বড়োই ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। সুযোগের অপেক্ষা করছিলেন, কীভাবে তুকারামকে সমুচিত জবাব দেওয়া যায়। তার দরুন অবশ্য খুব বেশি দিন অপেক্ষায় থাকতে হয়নি। একদিন তুকার কোনো গোরু মম্বাজির খেতের ফসল খেয়ে নষ্ট করলে, গোরুকে তো উত্তম-মধ্যম দেনই, উপরন্তু তার মালিক তুকাকেও পেটান। তুকার পক্ষে ওই ঘটনায় বৈষ্ণবোচিত আচরণই স্বাভাবিক ছিল এবং যথারীতি সেটাই তিনি পালন করেছিলেন। পরে অবশ্য মম্বাজি তাঁর আচরণের জন্য অনুতপ্ত হয়েছিলেন, বলা হয়।

আবার রামেশ্বর ভট্ট ছিলেন কর্ণাটি ব্রাহ্মণ। সেখান থেকে পুনে জেলায় এসে বসবাস করতে থাকেন। তাঁদের কুলদেবতা ছিলেন ব্যাঘ্রেশ্বর বা বাঘোলি। উচ্চবর্ণের অভিমান যেমন পুরো মাত্রায় ছিল, নৈষ্ঠিক ব্রাহ্মণের আচারবিচারে গোঁড়ামিও সেরকম। যদিও পরে তুকার শরণাপন্ন হয়েছিলেন। তা-ও আবার জ্ঞানদেবকে স্বপ্নে দেখে। বলা হয়, লোহেগাঁও অঞ্চলে তুকার ওই দুর্গতির জন্য নাকি রামেশ্বরই অনেকটা দায়ী ছিলেন। পরবর্তীকালে কোনো ব্যাধিতে তিনি খুবই দৈহিক কষ্ট পাচ্ছিলেন, তখন একদিন স্বপ্নে জ্ঞানদেবের কাছ থেকে তুকার কাছে গিয়ে ব্যাধিমুক্ত হওয়ার পরামর্শ পেয়ে তাঁর শরণাপন্ন হন। সুতরাং শৈব থেকে বৈষ্ণবানুগত,ধর্মান্তর বই কী। এ নিয়ে রামেশ্বরের ভণিতায় অভঙ্গও আছে।
ওই ব্রাহ্মণের অভিযোগক্রমে গাঁওপাটিলের বিচারসভার সিদ্ধান্তে তুকারামকে তাঁর পাণ্ডুলিপি ইন্দ্রায়ণীর জলে বিসর্জন দিতেও হয়েছিল। শূদ্রসন্তান হয়ে তিনি দেবভাষায় রচিত ভগবদ্গীতা পাঠেই শুধু উদ্যত হননি, দেশি ভাষা মারাঠিতে তার অনুবাদ এবং দর্শন ব্যাখ্যাতেও তৎপর হয়েছেন, যাকে তিনি ‘মন্ত্রগীতা’ আখ্যা দিয়েছিলেন— যে-কাজে ব্রাহ্মণের অধিকার, শূদ্র তা লঙ্ঘন করে কীভাবে, অভিযোগ ছিল এইরকমই। হিন্দু বর্ণাশ্রম ব্যবস্থায় বসবাস করে সেদিনের সমাজে কবি তুকারামকে ওই দণ্ড মেনে নিতে হয়েছিল। তেরো দিন অনশন করে কুলদেবতা বিট্ঠলের কাছে পড়েছিলেন। জলাঞ্জলি দেওয়া সেই পাণ্ডুলিপি— তুকার গীতাঞ্জলি অবশেষে দেবতা ফিরিয়ে দেন। একথা তিনি লিখে গেছেন। অগ্নিপরীক্ষার মতো কবির জীবনে ওই উদকপরীক্ষার তাৎপর্য যে-যার মতো বুঝে নেওয়াই ভালো।
পাণ্ডুলিপি জলাঞ্জলি দেওয়ার পর তেরো দিন অনশনে থেকে তাঁর কুলদেবতা বিট্ঠলের উদ্দেশে বলছেন— ‘তেরা দিবস ঝালে নিশ্চক্র করিতা’— তেরো দিন হয়ে গেল আছি অনশনে,/ মা-বাপের ভরসাও পাই না এ-মনে।/ পাষাণ খোলস পরে আছ তুমি বেশ,/ এমন হয়েছ তুমি কেন, হৃষিকেশ?/ পাণ্ডুরঙ্গ, দেব এই প্রাণ বিসর্জন,/ তোমার কারণে হবে আমার হনন।…’ এহেন অভিযোগের পর তাঁর ‘পাণ্ডুলিপি ফিরে পাওয়া’র (সমস্ত রচনারই ক্রমে স্মৃতিতে উদয়?) সূত্রে নিজের আচরণে অনুতাপের প্রকাশও লক্ষ করার মতো। বলছেন— ‘থোর অন্যায় কেলা/ তুঝা অন্ত ম্যাঁ পাহিলা’— অন্যায় করেছি বড়ো তোমার সহ্যের গুণে,/ খর হয়েছিল মন লোকের বচন শুনে।/ বিভেদবিলাসে ক্ষীণ আমি তো জঘন্য, হীন/ চোখ বুজে আমিও যে রয়ে গেছি তেরো দিন।’ আবার ভক্তের কষ্টে যেন দেবতাও কষ্ট পান, এহেন বোধও পাশাপাশি জাগ্রত হলে বলছেন, ‘কষ্ট বাড়ে তোমারও যে, নির্জলা উপোসে থাকি/ আমার এই প্রাণ শুধু তোমারই লালনে রাখি।’ শেষে জানাচ্ছেন— ‘কাগজ বাঁচালে জলে, মিটেছে গঞ্জনা ফলে,/ তোমারই নামের যোগ্য হয়ে আছ, তুকা বলে।’
আরও পড়ুন
বারকরী সন্ত হয়ে ওঠার আগে গোরা নাকি নামদেবকে পরীক্ষা করে বুঝেছিলেন পাত্রটি পুড়ে তেমন পাকা হয়নি
দুর্ভিক্ষও যাঁকে মারতে পারেনি, সমাজের মাতব্বররা তাঁকে আঘাত করে আর কতখানি কী করবে! নিরন্ন, অভুক্ত মানুষটি ঘুরে ফিরেছেন আপনমনে, কীর্তন করেছেন পাণ্ডুরঙ্গর— কথা বলেছেন তাঁরই সঙ্গে কবিতায়, ক্রমে সহচর হয়ে উঠেছে বৃক্ষ, লতা, বনচর, পাখিরা। স্বজনাত্মীয়ের কাছে অপদার্থ, লোকসমাজের কাছে নিকম্মা, একের-পর-এক অসাফল্যে দেউলিয়া একেবারে। অপমানিত হয়েছেন ঘরনির কাছে, সমাজেও। তবু সব কিছুকে তাঁর বিট্ঠলের, জীবনদেবতার লীলা বলেই মনে করেছেন। সমস্ত বেদনা, সব অভিযোগ প্রকাশ করেছেন তাঁর সেই দেবতার কাছে, কবিতায়। মিতায়তনে সেইসব ‘অভঙ্গ’ হয়ে উঠেছে তাঁর অন্তরপ্রকৃতির প্রতিবিম্ব। জীবনের অভিজ্ঞতায় জারিত সেইসব রচনা আমাদের কাছে তাঁর সরল, সাদাসিধে যাপনের মাঝে বিপর্যস্ত এক মানুষের আধ্যাত্মিক উৎক্রমণে ‘সন্তকবি’ হয়ে ওঠার দলিল— এক অসামান্য ‘ইনটিমেট জর্নাল’ মনে হওয়াই সঙ্গত।
কালের বাধা অতিক্রম করে সাম্প্রতিক পাঠক যদি তাঁকে কাছের মানুষ মনে করেন, তাহলে শুধু বাচনের সারল্যের জন্য নয়, তাঁর কবিত্বের প্রকৃতির ভেতরই এমন চুম্বকগুণ আছে, যার দরুন তিনি আমাদের আকর্ষণ করেন, মুগ্ধ করে উসকে দেন আত্মসাক্ষাতের অন্য আদলেও হয়তো। নিজস্ব মানসযাত্রার যে-বিবরণ ধরা আছে তাঁর কবিতায়— মিতবাক উপস্থাপনে অতুলনীয় আন্তরিকতায় তাঁর কবিপ্রকৃতির প্রসাদগুণে সেসব আপনজনের স্বর বলেই মনে হয়। তাঁর এবং আমাদের কালের ব্যবধান, যাপনের স্বাতন্ত্র্য, দৃষ্টিভঙ্গি, অভিজ্ঞতা, সর্বোপরি বিশ্বাসের পার্থক্য সত্ত্বেও, তিনি খুব দূরের মানুষ হয়ে তবু থাকেন না।
আরও পড়ুন
গোঁড়া ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির নিগ্রহ থেকে বাঁচতেই সংকেতলিপি ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন মহানুভবরা
আবার আরেকদিকে, তাঁর পূর্বসূরি একনাথ (১৫৩৩-৯৯) ব্রাহ্মণসন্তান হয়েও জনৈক রন্যা মহারের ঘরে শুধু আতিথ্যই নেননি, তাঁর ‘ভারুড়’ জাতীয় রচনায় অস্পৃশ্য মহারকে ব্রাহ্মণের শিক্ষক করেও তুলেছিলেন। তাঁর বিখ্যাত সেই রচনা ‘জোহার’ ভারুড়ের অন্তর্গত। কীর্তনের বাণী রচনার পাশাপাশি তাঁর ‘ভারুড়’এর সংখ্যা ঠিক কত বলা মুশকিল। স্বতন্ত্রভাবে সংকলিত হওয়ায় এখনও অবধি চার-শো একটির মতো সন্ধান পাওয়া যায়। লোকগানশৈলী আর লোকনাট্যের আঙ্গিকে একনাথের সেসব রচনা আজও গাওয়া হয়। বারকরীদের বার্ষিক তীর্থযাত্রার সময় অবসর বিনোদনে, বা কোনো কীর্তনিয়া দলের কেউ কেউ তা করে থাকেন। সেই রচনাটি আগে দেখে নেওয়া যাক। আপাতত একটি শিরোনামও দেওয়া যেতে পরে— ‘জোহার: ব্রাহ্মণ-মহারসংবাদ’, গুরু জনার্দন স্বামীর শিষ্য একনাথের মুদ্রিকা বা ভণিতাটিও লক্ষণীয়।
ব্রা— কী রে মহার? খুব যে দেখি তড়পানি তোর।
ম— কী হল গো বাউনবাবা? অমন করে বলছ কেন?
ব্রা— ডরাই নাকি বাপকে রে তোর?
ম— তোমার আমার মা-বাপটিকে একই জেনো।
ব্রা— এমন কথা বলিস না রে।।
ম— নির্গুণ থেকে এলাম যে গো!
ব্রা— নির্গুণ সে জানলি রে তুই কেমন করে?
ম— আত্মস্বরূপ চিনলে তবে জানবে যে গো।
ব্রা— আত্মস্বরূপ চিনব কি আর আমরা তবে?
ম— না চিনলে সব সন্তশরণ নাও না কেন?
ব্রা— সন্তশরণ নিলেও তখন কী আর হবে?
ম— চৌরাশির এই ঘোরাফেরা চুকবে জেনো।
ব্রা— কার কাছে বল, এ জ্ঞানখানা পেলি রে তুই?
ম— জনার্দনের পেরসাদে, ‘একা’ বলে পেলাম গো মুই।
আরও পড়ুন
বীরশিলা পুজোর সাবেক প্রকরণ বদলে যায় তাকে মানবিক অবয়ব দানের পর
ভক্তির পথে ভাগবতসমাজের গণতান্ত্রিক প্রসারের সূত্রে অন্তেবাসী বহু মানুষকে জাতি-বর্ণের ঊর্ধ্বে ‘ভক্ত’ পরিচয়ের গৌরব দেওয়া হয়েছিল। সনাতন পল্লিসমাজের ব্যবস্থাপনায় এঁদের শোষণ আর নিঃস্বতার যে-ছবি একনাথের ‘জোহার’ অংশের আটচল্লিশটি ভারুড়ে পাওয়া গেছে, তার তুলনা বিরল। রূপকাশ্রয়ের কারণে তাঁর বক্তব্য অনেকসময়ই দ্ব্যর্থক, বা একাধিক মাত্রায় বিচার্য হয়ে উঠেছে। তাঁর এই জাতীয় রচনার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য ছাড়াও সামাজিক ইতিহাসের ক্ষেত্রে তাদের গুরুত্ব কেউই অস্বীকার করতে পারেননি।
একনাথের ‘ভক্ত মহার’এর নাম কখনো ‘আত্মনাক’, কখনো ‘বিবেক নাইক’, আবার কখনো সে ‘বিঠানাক’। ‘নাক’ হল তৎসম ‘নায়ক’ থেকে আসা ‘নাইক’ শব্দের ভগ্নাংশ। তার অর্থ পরিবার বা কোনো মণ্ডলীর প্রধান ব্যক্তি। একনাথের মহার গ্রাম বা শহরের আত্মা বা বিবেক। সমগ্র শরীর কোনো গ্রাম বা শহর, তার নাম তাই কখনো ‘কায়াপুর’ কখনো ‘শরীরাবাদ।সেই গ্রাম বা শহর শঠতা, লোভ, ঈর্ষা, মোহ, দম্ভ, অহংকারের অকল্যাণে আচ্ছন্ন। তা ছাড়াও আছে বার্ধক্য, জরা, মৃত্যু,পুনর্জন্মের দুঃখভোগ। বার বার এসব বিষয় উত্থাপন করা হয়েছে ‘জোহার’ অংশের ভারুড়ে। এমনকী পরলোকে যন্ত্রণাভোগের কথাও। ভীতিসঞ্চারী সেইসব কথা গ্রাম বা শহরের (কায়াপুর/শরীরাবাদ) বিবেকের স্বরে একনাথের ‘মহার’ তার চেতাবনিতে প্রকাশ করেছে। ‘জীবাজী’(জীবাত্মা) হল এই গ্রামের প্রকৃত অধিকারী, তার রক্ষিতা একনাথের মহারের কথায় ‘পাটলীণ আবা’, পঞ্চেন্দ্রিয়ের শাসনে সে ঘর বেঁধেছে।
আরও পড়ুন
সুলতানি আমলে পনঢরপুরের দেবস্থানেও নাশকতার আশঙ্কা কিছু কম ছিল না
নাথপন্থীদের সূত্রে ‘সন্ধাভাষা’য় লেখা দেহতাত্ত্বিক গানের উত্তরাধিকার আরও অনেকেই পেয়েছিলেন। কিন্তু একনাথ তাঁর সময়ের পরিপ্রক্ষিতে যে বিশাল সামাজিক পটভূমিতে সেসব সচেতনভাবে ব্যবহার করেছিলেন, তার তুলনা বিরল। তাঁর নামটিও তো সেই যোগসূত্রকে চিনিয়ে দেয়। বেদ-ব্রাহ্মণবিরোধী নাথপন্থের সঙ্গে মহারাষ্ট্রীয় যোগাযোগ যথেষ্ট প্রাচীন। ভাগবতধর্মী মারাঠি সন্তদের গুরুকুল যার যেমনই হোক-না-কেন, নাথপন্থের সঙ্গে তাঁদের যোগসূত্র কেউই অস্বীকার করেননি। সেই স্বীকৃতি বহিণাবাইয়ের (১৬২৮-১৭০০) অভঙ্গেও রয়েছে। কিন্তু একনাথের এই জাতীয় রচনার দার্শনিক ভিত্তি ‘জ্ঞানেশ্বরী’র ত্রয়োদশ অধ্যায় (গীতার ক্ষেত্রক্ষেত্রজ্ঞবিভাগযোগ) সূত্রেও চিনতে পারা যায়।
(পরবর্তী অংশ আগামী রবিবার)