সারা দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। প্রতিদিন প্রায় ৬০ হাজারের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন সেখানে। মর্মান্তিকভাবে গত কয়েকদিনে হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার লিক হয়ে বেশ কয়েকজন করোনা আক্রান্ত রুগী হাসপাতলে ভর্তি থাকা অবস্থাতেই মারা গিয়েছেন। শুক্রবার এরকম আরেকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আরও ১৪ জন আক্রান্ত হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় আগুনে পুড়ে মারা যান। যাবতীয় ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। যদিও সরকারের বিরুদ্ধে করোনা মোকাবিলায় গাফিলতির অভিযোগ বেশ কয়েকদিন ধরেই উঠছিল। একের পর এক অগ্নিকাণ্ড এই অভিযোগকে আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে এই পরিস্থিতিতে মুম্বাইয়ে আইপিএলের ম্যাচ হওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষদের একটা বড়ো অংশ।
একটি আইপিএল ম্যাচ আয়োজন করতে গেলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যেমন উচ্চপর্যায়ের বন্দোবস্ত থাকে সেইসঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামের ব্যবহার হয়ে থাকে। এই মুহূর্তে যে পরিস্থিতি তাতে অক্সিজেন, স্যানিটাইজার, রেমডিসিভির সহ করোনা মোকাবিলায় যা যা লাগে তার কোনোটাই বিন্দুমাত্র অপচয় করা সম্ভব নয়। উল্টে সেখানে আইপিএল চলায় স্বাভাবিক নিয়মেই বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় মাঝেমধ্যে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং তাদের চিকিৎসার জন্য যাবতীয় জিনিসপত্রের বন্দোবস্ত রাখতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই মুহূর্তে এই ঘটনাকে অপচয় হিসেবে দেখছেন।
আরও পড়ুন
দেশে করোনা সংক্রমনের বাড়বাড়ন্তের জন্য কেন্দ্রকে সরাসরি কাঠগোড়ায় তুললেন মমতা
কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি মহারাষ্ট্র সরকারেরও প্রাধান্য তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের পরিষ্কার বক্তব্য মহারাষ্ট্রে এই মুহূর্তে করোনা পরিস্থিতি যে পর্যায়ে পৌঁছেছে সেখানে কোনও রকম জটলা, দল বেঁধে থাকা চলবে না। অথচ আইপিএলের স্বাভাবিক নিয়মেই খেলোয়াড়দের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক মানুষ মাস্ক ব্যবহার করেন না। এই অবস্থা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। এমনিতেই সেই রাজ্যে করণা আক্রান্ত সাধারণ মানুষের একটা বড়ো অংশ হাসপাতালে জায়গা পাচ্ছেন না করোনা আক্রান্ত রুগীরা। এই পরিস্থিতিতে কেন আইপিএল চলতে দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে এর আগের আইপিএল দেশের বাইরে আরব আমিরশাহীতে আয়োজিত হওয়ায় অতটা বিতর্ক তৈরি হয়নি। কিন্তু এবার দেশের মাটিতে যখন আইপিএল চলছে সেই সময় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখের গন্ডি পেরিয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে এই ভয়াবহ অবস্থায় আইপিএলের মতো বিনোদনমূলক খেলার অনুমতি দেওয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে মহারাষ্ট্র সরকার।