কেন্দ্রীয় সরকার যে প্রাথমিকভাবে দেশের ৩০ কোটি মানুষকে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রাকে পাখির চোখ করেছে তা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবের আজকের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার হয়ে গেল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব আজ পরিষ্কার বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন প্রথম পর্যায়ে ১ কোটি স্বাস্থ্যকর্মী, ২ কোটি বাকি করোনার যোদ্ধা (পুলিশ ও সেনা কর্মীরা সহ) এবং ২৭ কোটি বয়স্ক ও কোমর্বিডিটিতে আক্রান্ত মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে তারা। সেই মতই দেশ জোড়া পরিকাঠামো গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাকেশ ভূষণ তার আজকের বিবৃতিতে জানিয়েছেন ভ্যাকসিন বন্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলা ও সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কেন্দ্রীয় স্তরের পাশাপাশি প্রতিটি রাজ্যে ত্রিস্তরীয় কমিটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি রাজ্যের মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে রাজ্যওয়ারি স্টিয়ারিং কমিটি তৈরি করা হয়েছে। এই কমিটির কাজ হবে সংশ্লিষ্ট সমস্ত দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা। রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের নেতৃত্বে রাজ্য স্তরের টাস্কফোর্স গড়ে তোলা হবে। যাদের কাজ হবে ভ্যাকসিন পরিবহন ও বন্টন ব্যবস্থাটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। সেইসঙ্গে প্রতিটি রাজ্যে ২৪×৭ ঘন্টার জন্য কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হবে। তিনি আরো জানান প্রতিটি জেলার জেলা শাসকের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স তৈরি করা হবে। মিউনিসিপ্যাল অঞ্চলের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান বা মেয়রদের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স গড়ে তোলা হবে।
আরও পড়ুন
তার বিবৃতিতে রাকেশ ভূষণ জানান ভ্যাকসিন সংরক্ষন ও বন্টন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই জাতীয় স্তরের নিয়ন্ত্রক কমিটি আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। আজ ছিল রাজ্য স্তরের কমিটিগুলির মিটিংয়ের দিন। আগামী ১৪ এবং ১৫ ডিসেম্বর যথাক্রমে জেলা ও ব্লক স্তরের টাস্কফোর্সগুলিকে আলোচনার মাধ্যমে যাবতীয় বিষয় নির্ধারণ করে ফেলার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তিনি।
একেবারে প্রথম পর্যায়ে ৩ কোটি ভ্যাকসিন মজুদ করা ও বিতরণের জন্য যাবতীয় পরিকাঠামো গড়ার কাজ প্রায় সম্পূর্ণ বলে জানান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে দেশে এই মুহূর্তে ২৮,৯৪৭ টি কোল্ড স্টোরেজ আছে ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করার জন্য।
আরও পড়ুন
হ্যাঁ বা না, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ দিয়ে আজ সরাসরি এটাই জানতে চাইবে কৃষক নেতারা
স্বাস্থ্য সচিবের আজকের বিবৃতির পর কেন্দ্রীয় সরকারের নিতী নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। অনেকেই ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে করোনা যোদ্ধা এবং বয়স্ক মানুষ মিলিয়ে ৩০ কোটি দেশবাসীকে ভ্যাকসিন দিয়েই নিজেদের যাবতীয় দায় ঝেরে ফেলতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। এক্ষেত্রে তারা আইসিএমআর প্রধানের করা কয়েকদিন আগের মন্তব্য সামনে তুলে ধরছে। যেখানে তিনি বলেন “সরকার কোনোদিন বলেনি সমস্ত দেশবাসীকে করোনার ভ্যাকসিন দেবে!”