সমস্ত জল্পনা শেষ পর্যন্ত জলে গেল। নির্বাচন কমিশনের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে আগের মতোই ভোট প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তবে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে করোনা বিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। মূলত বিজেপির বাধাতেই ভোটের দফা কমানো বা প্রচার পর্বের ওপর বিধিনিষেধ জারি করতে পারেনি কমিশন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির সঙ্গে বাকি রাজনৈতিক দলগুলির বিরোধ অত্যন্ত স্পষ্ট।
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের সঙ্গে বৈঠক করে বাইরে বেরিয়ে এসে বিজেপির পক্ষ থেকে স্বপন দাশগুপ্ত জানান তারা করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সতর্কতার সঙ্গে প্রচার পর্ব চালাতে চান। কিন্তু নির্বাচনের স্পিরিট যাতে নষ্ট না হয়ে যায় তাই শুধুমাত্র ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার করার ক্ষেত্রে বিজেপি সম্মত নয়। সেই সঙ্গে রাজ্যসভার এই প্রাক্তন সাংসদ জানিয়েছেন আগের মতই নিয়ম মেনে মোট আটটি দফাতেই ভোট করানো উচিত। অবশ্য ছোট রাজনৈতিক দল এবং নির্দলদের অসুবিধার কথা উল্লেখ করে কিছুটা সাফাইয়ের সুর শোনা গিয়েছে বিজেপির গলার। স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি ছোট রাজনৈতিক দল বা নির্দল প্রার্থীরা ডিজিটাল মাধ্যমে ভোট প্রচার চালাতে পারবেন না। সেইজন্যই আগের মতোই সভা সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হোক।”
আরও পড়ুন
WB Election 2021: অনুপ্রবেশকারীদের তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্ক বলে দাবি অমিত শাহ’র
নির্বাচন কমিশন বিজেপির দাবি মেনে নেওয়ায় এটুকু পরিষ্কার হয়ে গেল রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশে জনসমাগম হওয়ার উপর কোনও দড়ি টানা হচ্ছে না। যদিও বামেদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছিল বড়ো বড়ো সভা-সমাবেশ বাতিল করে ছোটো ছোটো মিটিং করা হোক। তাদের দাবি ছিল মূলত ডিজিটাল মাধ্যমকে ব্যবহার করে বাকি চারটি দফার ভোট প্রচার চালানোর নির্দেশ দিক নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে বামেদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় নির্বাচন কমিশন বাকি রাজনৈতিক দলগুলিকে করোনা বিধি কঠোরভাবে মেনে চলার ক্ষেত্রে বাধ্য করছে না। উল্লেখ্য বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে তারা আর কোনও বড়ো সভা করবে না। বরং ছোটো ছোটো মিটিং করার পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমের ওপর ভর করে পরবর্তী চারটি দফার প্রচার কাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
তৃণমূলের পক্ষ থেকেও বাকি চারটি দফার ভোট এক বা দুই দফায় সেরে ফেলার অনুরোধ জানানো হয়। রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য ভোটের দফা যত বাড়বে ততই সাধারণ মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক সভা সমাবেশকে কেন্দ্র করে ভিড় জমানোর প্রবণতা চলতে থাকবে। উল্লেখ্য তৃণমূল দফা কমাতে রাজি হলেও বড় সভা-সমাবেশ বন্ধ করতে সম্মত ছিল না। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল অন্যান্য অনেক বিষয়ের মত করোনা পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে ওঠা সত্ত্বেও বিজেপির দাবি মেনে সবকিছু আগের মত চালু রাখল নির্বাচন কমিশন।