মুখ্যমন্ত্রী হয়েই আবার পুরানো ফর্মে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশন ভোটের আচরণবিধি জারী করার পরই রাজ্য পুলিশের একাধিক শীর্ষ পদে পরিবর্তন ঘটায়। সবচেয়ে বড়ো পরিবর্তন হয় রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র’কে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তারা সরিয়ে দিয়েছিল। পরিবর্তে পি নীরজনয়ন’কে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক পদে নিযুক্ত করে। এর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) পদ থেকে জাভেদ শামীমকে সরিয়ে দেয়। এই দুই শীর্ষস্থানীয় পুলিশ আধিকারিককে আবার পুরনো পদে ফিরিয়ে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর আগেও একাধিকবার দেখা গিয়েছে নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন পুলিশের শীর্ষ স্তরে বিভিন্ন আদল বদল করে এবং ভোট প্রক্রিয়ায় মিটে গেলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বিশ্বস্ত পুরানো পুলিশ অফিসারদের আবার আগের পদেই ফিরিয়ে আনেন। সেই ঘটনার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই ডিজি পদে ফিরিয়ে আনলেন বীরেন্দ্র’কে। এর পাশাপাশি এডিজি (আইন শৃঙ্খলা) জগমোহনকে তার পুরানো দমকলের ডিজি পদে বদলি করে দিয়েছেন। বদলে তার জায়গায় নির্বাচনের আগে দায়িত্বে থাকা জাভেদ শামীমকে ফিরিয়ে এনেছেন।
আরও পড়ুন
করোনা আটকাতে শপথ নিয়েই লোকাল ট্রেন বন্ধ করলেন মমতা
সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্বাচন কমিশন ইচ্ছে করে এই পদগুলোতে পরিবর্তন করেছিল। বীরেন্দ্র এই মাসেই রিটারমেন্ট করবেন। তার আগে তাকে সম্মান দিয়ে পুরানো পদ ফিরিয়ে দেওয়া হল।” রাজ্য প্রশাসনের অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর নিজের অনুগত অফিসারদের নিয়ে চলতে পছন্দ করেন। নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তন করে দেওয়া আধিকারিকদের তিনি কখনই তাদের পদে রেখে দেন না। জাভেদ শামীম রাজ্য পুলিশের অভ্যন্তরে অত্যন্ত দক্ষ অফিসার হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত স্নেহের পাত্র। স্বাভাবিকভাবেই এই রদবদলে রাজনৈতিক মহল খুব একটা অবাক হচ্ছে না।
যদিও নির্বাচনী আচরণবিধি ।শেষ হলেই রাজনৈতিক দলগুলির পছন্দসই পরিবর্তন খুব একটা ভালো নজরে দেখছে না নির্বাচন কমিশন। তারা বেশ কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারকে সুপারিশ করেছে যে আইন এনে এই রদবদল আটকে দেওয়া হোক। নির্বাচন কমিশনের মতে ভোট প্রক্রিয়া চালাতে গিয়ে তারা প্রশাসনিক সূত্রে যে রদবদল করবে তা যেন আগামী অন্তত এক বছর স্থায়ী হয়। তবেই অফিসাররা মুক্তমনে কাজ করতে পারবে। পরে কি হবে সেটা পরের ব্যাপার, কিন্তু এটুকু পরিষ্কার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার পরে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছেন। তিনি দ্রুত তার টিম গুছিয়ে নিচ্ছেন।