আজ থেকে প্রায় কয়েক লক্ষ বছর আগে যখন পৃথিবীতে মানুষের কোনো অস্তিত্ব ছিলো না, তখন মূলত ডায়নোসররাই রাজত্ব করেছে পৃথিবীর বুকে। বৃপৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া এই বিশালাকৃতি প্রাণীদের পাওয়া যাওয়া জীবাশ্মই এদের অস্তিত্ব প্রমাণ করে।। এদের আচার, আচরণ, আকৃতি নিয়ে গবেষকরা এখনও নানা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিজ্ঞানীদের ধারণা যে, প্রায় দু’কোটি বছর ধরে ডাইনোসরেরা পৃথিবীতে বসবাস করেছে। পরে ভূপৃষ্ঠে কোনো এক উল্কাপিন্ডের আছড়ে পড়ায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় ডায়নসর সহ তৎকালীন পৃথিবীর অধিকাংশ জীবকুল। ক্রিটেসিয়াস যুগ সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও কিছু সেই সময়কার কিছু প্রাণী নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে পেরেছিল বলেই অনুমান করছে বিজ্ঞানীদের একাংশ।
সুইডেনের উপ্পাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু গবেষক সম্প্রতি একটি নতুন তথ্য সামনে এনেছেন। তাঁদের দাবী ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ডায়নসর সহ অন্যান্য প্রাণীরা বিলুপ্ত হলেও কোনোরকম বেঁচে গিয়েছিলো হাঙর প্রজাতি। বিজ্ঞানীরা ১,২৩ টি হাঙরের জীবাশ্মের দাঁত পরীক্ষা করে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। এই জীবাশ্মগুলো প্রায় ২৭ লক্ষ বছর পুরোনো। বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার ‘প্লস বায়োলজি’ নামক এক জার্নালে প্রকাশ পেয়েছে। আরও জানা যায় হাঙরেরা উল্কাপাতের ফলে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলো, কিন্তু তাদের ডিএনএর সেই ক্ষতি সামলানোর দক্ষতা থেকেই তারা আবার পুনরুজ্জিবীত হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন
১০০০ বছর পুরোনো তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সমাধি পাওয়া গেলো ফিনল্যান্ডে; কেমন ছিল তাদের সামজিক মর্যাদা

ওই জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটির বিষয়ে বিস্তারিত জানানো সময় এই গবেষণার প্রধান লেখক মোহাম্মদ বাজ্জি বলেন বিস্ফোরক উল্কাপিণ্ডটি পৃথিবী থেকে ডায়নোসরদের বিলুপ্ত করলেও হাঙরদের সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি। হাঙরেরা পৃথিবীর বুকে এমন অনেক বড় আকারের বিবর্তনের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে। হাঙর জাতীয় প্রাণীরা প্রায় ৪৫০ লক্ষ বছর ধরে বসবাস করছে পৃথিবীর বুকে। সাদা হাঙর এবং তার নিকটবর্তী প্রজাতিদের প্রথিবীর কঠিনতম জন্তু হিসাবে ধরা হয়, কারণ তাদের ডিএনএ পুনরুদ্ধার করার ক্ষমতা আছে।
ওই গবেষকদের দলটি প্রায় ৯টি হাঙর প্রজাতির মোট ১২৩৯টি দাঁত পরীক্ষা করেছেন। যেগুলো প্রায় ২৭ লক্ষ বছর পুরোনো এবং এই জীবাশ্মগুলি সময়কাল প্যালিওজিন পিরিয়ড থেকে ক্রিটেসিয়াস পিরিয়ড পর্যন্ত বিস্তৃত। কিছু প্রজাতি যাদের দাঁত ধারালো ত্রিভুজাকৃতির তারাই এই গণ বিলুপ্তির সময় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে এই প্রজাতির হাঙরেরা জলের ওপরের দিকের কিছু প্রাণীদের খেয়ে বেঁচে থাকতো। এই সব প্রাণীদের বিলুপ্ত হওয়ার কারণেই সমস্যা হয়েছে পরবর্তীকালে সমস্যা হয়েছে হাঙর প্রজাতির প্রাণীদের।
আরও পড়ুন
১৫ আগষ্ট নয় পশ্চিমবঙ্গের এই অঞ্চলে ১৮ আগস্ট পালিত হয় স্বাধীনতা দিবস, জানুন অজানা ইতিহাস

প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন বছর ধরে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ অতিক্রম করে পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকার জন্য এদের জীবন্ত জীবাশ্মও বলা হয়ে থাকে। এছাড়াও হাঙরদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব বেশী। তাই এরা সচরাচর সংক্রমিত কিংবা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়না।