লকডাউনের পথে প্রথম পদক্ষেপ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শুক্রবার বিকেলের পর রাজ্যের মুখ্যসচিবের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে রাজ্যে আংশিক লকডাউন শুরু হচ্ছে। যদিও সরকারি নির্দেশিকায় লকডাউন শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু যে বিধি-নিষেধ সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে তাতে বলাই যায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য আংশিক লকডাউন শুরু হয়ে গেল রাজ্যে। এর ফলে রেস্তোরাঁ, শপিং মল, বিউটি পার্লার, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ক্লাব, স্পা, কোচিং সেন্টার সবকিছু আবার বন্ধ হয়ে গেল অনির্দিষ্টকালের জন্য। এমনকি দোকান বাজার কতক্ষণ খোলা থাকবে সেটা নিয়েও নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে এই নির্দেশিকায়। স্পষ্ট জানানো হয়েছে সকাল এবং বিকেলে খুব অল্পসময়ের জন্য বাজার হাট খোলা রাখা যাবে। তবে ওষুধ দোকান এবং মুদিখানা দোকানের পাশাপাশি অনলাইন ডেলিভারি পরিষেবা চালু রাখার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিয়েছে সরকার।
এই সরকারি নির্দেশিকায় পরিষ্কার জানানো হয়েছে রাজ্যের বর্তমান করোনা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে মুদিখানা এবং ওষুধ দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকান ও বাজার প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত খুলে রাখা যাবে। একইরকমভাবে বিকেল বেলায় ৩ টে থেকে ৫ টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকবে বলে পরিষ্কার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ অমান্য করলে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। যদিও পরিবহন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এই নির্দেশিকায় কোনও বিধি-নিষেধ জারি করা হয়নি।
আরও পড়ুন
সামাজিক মাধ্যমে অক্সিজেন চেয়ে পোস্ট করলেও কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ার নির্দেশ সর্বোচ্চ আদালতের
রাজ্য সরকারের এই আংশিক লকডাউনকে পূর্ণ লকডাউনের পথে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেইসঙ্গে তাদের মতে রাজ্যে যেভাবে দৈনিক সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতিতে বেড়ে চলেছে তাতে লাগাম পড়ানোর জন্য এরকম পদক্ষেপ জরুরি ছিল। এর ফলে রাস্তাঘাটে ভিড় অনেকটাই কমবে। সম্ভবত সরকারি পদক্ষেপের ফলে সন্ধে নামার পরে গত বছরের মতো অন্ধকারে ঢেকে যাবে রাজ্যের সমস্ত প্রান্তর।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের অনুমান এই মিনি লকডাউনের পর পূর্ণ লকডাউনের পথে হাঁটা দেবে রাজ্য সরকার। তবে তার জন্য ভোটের ফল প্রকাশ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এই নির্দেশিকায় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আরেকবার ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে ভোটের ফল প্রকাশের পর কোথাও কোনওরকম বিজয় মিছিল বা জামায়াত করা যাবে না। সমস্ত রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয়েছে এই নির্দেশিকায়।