সম্প্রতি খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার গোসিয়াম থমারা সিথোলা নামে এক ভদ্রমহিলা। জানা গিয়েছিল তিনি একসঙ্গে ১০ টি সন্তান প্রসব করেছেন! চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ঘটনাকে বলে ডেকুপ্লেটস। কিন্তু জানা গেল ডেকুপ্লেটস সেখানে ঘটেনি। অর্থাৎ একসঙ্গে দশটি শিশুর জন্ম দেওয়ার মত ঘটনা সে দেশের কোথাও ঘটেনি। এমনকি যে গৌতেং প্রদেশ এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছিল সেখানে জুন মাসে যমজ শিশু জন্ম নেওয়ার একটি ঘটনাও ঘটেনি বলে সমস্ত হাসপাতাল জানায়।
শেষ পর্যন্ত গোসিয়াম থমারা সিথোলা নামে ওই ভদ্রমহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা যায় একত্রে দশটি শিশু জন্ম দেওয়াতো দূরের কথা, উনি একটিও শিশুসন্তানের জন্ম দেননি সাম্প্রতিক সময়ে! এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয় সম্ভবত একত্রে দশটি শিশুর জন্মের কথা প্রচার করে ওই মহিলা এবং তার সঙ্গী বেআইনিভাবে অর্থ উপার্জনের পরিকল্পনা করেছিলেন।
আরও পড়ুন
ভারতের এই গ্রামে লিভ-ইন বৈধ! মেলায় কোনও পুরুষের কোনও মহিলাকে পছন্দ হলে তাকে নিয়ে পালিয়ে যায়
৩৭ বছরের গোসিয়াম থমারা সিথোলা তার লিভিং পার্টনার তেবোভো সোটেটসি এবং ৬ বছরের যমজ সন্তানকে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী জোহানেসবার্গের নিকটবর্তী গৌতেং প্রদেশের থোম্বিসা শহরে বসবাস করতেন। করতেন, কারণ একসঙ্গে দশ সন্তানের জন্ম দেওয়ার ঘটনা মিথ্যে বলে জানাজানি হয়ে যেতেই এই যুগলের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছে। তারা পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন। বর্তমানে সন্তান জন্মের মিথ্যে কথা বলার জন্য গোসিয়াম থমারা সিথোলা নামে ওই মহিলার মানসিক চিকিৎসা চলছে দক্ষিণ আফ্রিকার এক সরকারি হাসপাতালে।
এই গোটা ঘটনার সূত্রপাত হয় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম সারির সংবাদপত্র প্রিটোরিয়া নিউজের সম্পাদক পিয়েট রাম্পোদির হাত ধরে। জানা যায় গত মে মাসে গোসিয়াম থমারা সিথোলা এবং তার লিভিং পার্টনারের সঙ্গে দেখা করেন রাম্পোদি। ওই সময় তিনি নাকি ওই মহিলার বিশালাকৃতির পেট দেখেছিলেন। সেই সময় মহিলা তাকে জানিয়েছিলেন তিনি গর্ভবতী, সেই কারণেই তার চেহারা এইরকম হয়েছে। পরবর্তীকালে ওই যুগলের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাম্পোদির কাগজ প্রিটোরিয়া নিউজ ৮ জুন দশটি সন্তান জন্মের বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে আসে। তবে তারা এই বিষয়টির সত্যতা আলাদা করে যাচাই করেনি। পরবর্তীকালে এই খবর ভুল প্রমাণ হলে রাম্পোদি সঠিক খোঁজ খবর না নিয়ে এই সংবাদ করার জন্য সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন
রেস্তোরাঁর আড়াই হাজার টাকার বিল মেটাতে গিয়ে ১১ লক্ষ টাকা টিপস দিলেন এক ব্যক্তি!
জানা গিয়েছে দশটি সন্তানকে বড় করার জন্য এই দম্পতি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন। তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যেই বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য এসে পৌঁছায় তাদের কাছে। এরপরই অর্থের ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা ঘটে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার এই দম্পতি পৃথক থাকা শুরু করেছেন। দশটি সন্তানের জন্মের বিষয়টি ভুয়ো হিসেবে প্রমাণিত হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা প্রশাসন অত্যন্ত কঠোর মনোভাব নিয়েছে। তাদের দাবি পরিকল্পিতভাবে তাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বদনাম করার জন্য ওই দম্পতি এরকম কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন।